অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : বহুল কাঙ্ক্ষিত মেট্রোরেল উদ্বোধন হচ্ছে আজ। এরমধ্য দিয়ে রাজধানীবাসীর প্রতীক্ষার অবসান হচ্ছে। এই দিন উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত চলবে মেট্রোরেল। যানজটের ভোগান্তিতে নাভিশ্বাস ওঠা নগরবাসীর জন্য মেট্রোরেল স্বস্তি এনে দেবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এটি আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন। এর মাধ্যমে দেশের যোগাযোগ খাতে লাগছে নতুন প্রযুক্তির ছোঁয়া। দেশের জনগণকে এটি নিয়ে যাবে প্রযুক্তির নতুন যুগে।
মেট্রোরেল আজ উদ্বোধন হলেও যাত্রীরা আগামীকাল থেকে যাতায়াত করতে পারবেন। প্রথম দিকে মেট্রোরেল সীমিত আকারে চালু হলেও ধীরে ধীরে বাড়বে এর পরিসর। আগামীকাল থেকে সারা দিনে মোট চার ঘণ্টা চলবে মেট্রোরেল। সকাল ৮টা থেকে ১২টা পর্যন্ত ১০ সেট ট্রেন চলবে। এ ছাড়া সকল স্টেশনে এটি দাঁড়াবে না। দিয়াবাড়িতে উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে যাত্রা শুরু করে এটি সরাসরি যাবে এ অংশের শেষ প্রান্ত আগারগাঁও স্টেশনে। উত্তরা থেকে আগারগাঁও অংশে মেট্রোরেলের পূর্ণাঙ্গ অপারেশ চালু হবে আগামী ২৬ মার্চে।
পরিবহন বিশেজ্ঞরা বলছেন, সড়কে বিভিন্ন পরিবহনের বিশৃংঙ্খলা, সড়কের তুলনায় যানবহন বেশি হওয়াসহ নানা কারণে প্রায় প্রতিদিন ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে পড়ছেন কর্মজীবী মানুষ। এই যানজট থেকে রেহাই দিতে যাতায়াতের একটি আধুনিক মাধ্যম হবে মেট্রোরেল। বর্ষাকালে জলজট, সাধারণ দিনে সময়মতো বাস না পাওয়া, অতিরিক্ত ভিড়, বাস কর্মচারীদের দুর্ব্যবহারে ঢাকার মানুষে কাছে নিত্যদিনের ভোগান্তি হয়ে দাড়িয়েছে। এই ভোগান্তি থেকে মানুষকে রক্ষা করে যাত্রীবান্ধব হবে মেট্রোরেল।
মেট্রোরেলের উদ্বোধন ঘিরে ইতোমধ্যে স্বপ্ন বুনতে শুরু করেছে মানুষ। রাজধানীর বুকে বিশাল এই উন্নয়ন প্রকল্প ঢাকাবাসীর মধ্যে নতুন আশার সঞ্চার করেছে। মেট্রোরেল নগরবাসীর যানজটের ভোগান্তি কিছুটা হলেও লাঘব করবে। অত্যাধুনিক এই যোগাযোগ ব্যবস্থা আমাদের উন্নত দেশের কাতারে নিয়ে যেতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করেন নগরবাসী।
বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. আইনুল ইসলাম বলেন, ‘ডিজিটাল থেকে স্মার্ট বাংলাদেশে রূপদান করার জন্য মেট্রোরেল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে ঢাকাবাসী যানজটের কবল থেকে মুক্তি পাবে। যানজটের কারণে আমাদের অনেক বড় একটি সময় অপচয় হয় এবং এর কারণে বড় অংকের আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হই তা থেকে কিছুটা হলেও মুক্তি দেবে মেট্রোরেল। যেটা আমাদের জিডিপিতেও বড় ভূমিকা রাখবে। এখন কাজ হচ্ছে, মেট্রোরেল চালু হওয়ার পর এটাকে যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে সেবার মান অব্যাহত রাখা।’
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) তথ্যমতে, মেট্রোরেল ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১০০ কিলোমিটার গতিতে চলতে পারবে। শুরুর দিকে রাজধানীর দিয়াবাড়ি স্টেশন থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত প্রায় ১০ মিনিট লাগবে।’
ডিএমটিসিএল সূত্র বলছে, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি হবে শেরেবাংলা নগরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে। এই অনুষ্ঠানে মন্ত্রিসভার সদস্য, রাজনীতিবিদ, কূটনীতিক, সরকারি কর্মকর্তাসহ প্রায় ২ হাজার অতিথি থাকবেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের বিষয়ে ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএনএ সিদ্দিক বলেন, ‘মেট্রোরেলের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের জন্য সব প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। বাড়তি চাকচিক্য না থাকলেও উদ্বোধনী অনুষ্ঠান খুব ভালোভাবে করার জন্য চেষ্টা থাকবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘নিরাপত্তা ও নানা আনুষ্ঠানিকতার কারণে উদ্বোধনের দিন জনসাধারণের মেট্রোরেলে চড়ার সুযোগ থাকছে না। যাত্রীরা ২৯ ডিসেম্বর (আগামীকাল) থেকে মেট্রোরেলে উঠতে পারবেন।
Leave a Reply